আমাদের দেশে বহুকাল ধরে রূপ কথার গল্পের মত আলোচিত ফেরাউনের দেহ তথ্য।
(মিশরের জাদুঘরে অক্ষত ফিরাউনের লাশটি নিয়ে চলছে নানা রকম সন্দিহান)
বিজ্ঞানের এই যুগে অবাস্তব কোন জিনিস মানুষের অগাধ বিশ্বাসকে লুণ্টন করে বেশি সময় টেকসয় হয়না।
আধুনিক চিন্তাচেতনার সামনে অনেক কিছুই দিবালোকের ন্যায় প্রকাশমান ।
![]() |
দ্যা রয়েল জাদুঘর : কায়রো ,মিশর |
হযরত মূসা (আ:) সময়কার ফেরাউনের লাশের ব্যাপারে দেহতথ্য কি?
👀 এবার আসোন কুরআনের আলোকে যুক্তি ও বাস্তবতার মাধ্যমে বিষয়টা পরিস্কার করে নেওয়া যাক।
۞
۞
فَالْيَوْمَ نُنَجِّيكَ بِبَدَنِكَ لِتَكُونَ لِمَنْ خَلْفَكَ آَيَةً وَإِنَّ كَثِيرًا مِنَ النَّاسِ عَنْ
آَيَاتِنَا لَغَافِلُونَ
۞৯২:
অর্থাৎ “আজ আমি তোমার দেহ চড়া ভূমিতে রক্ষা করবো যাতে তুমি তোমার পরবর্তীদের জন্য নিদর্শন হয়ে থাক। অবশ্য মানুষের মধ্যে অনেকেই আমার নিদর্শন সম্পর্কে উদাসীন।” (১০:৯২)
যারা বলছে ফেরাউনের লাশ মিশরে সংরক্ষণ তাদের ধারণা হল... মিশরের ফেরাউন বংশের রাজা ফেরাউন ২য় এর মমী অলৌকিকভাবে সংরক্ষিত আছে।
آَيَاتِنَا لَغَافِلُونَ
۞৯২:
অর্থাৎ “আজ আমি তোমার দেহ চড়া ভূমিতে রক্ষা করবো যাতে তুমি তোমার পরবর্তীদের জন্য নিদর্শন হয়ে থাক। অবশ্য মানুষের মধ্যে অনেকেই আমার নিদর্শন সম্পর্কে উদাসীন।” (১০:৯২)
পবিত্র এই কোরআনের আয়াতকে পূজি করে তথা কথিত বিভ্রাতকারীরা নিজেদের সংস্কৃতিকে বিশ্বদরবারে উচ্চমাত্রায় চালিয়ে দেওয়ার জন্য ফন্দি এটে দিয়েছে।
ধারণা করা হচ্ছে ঐতিহাসিকগণ ১৮৯৮ সালে ফেরাউনের লাশ উদ্ধার করেন। যা আজ মিশরের কায়রোতে দ্যা রয়েল মমী হলে একটি কাচের সিন্দুকের মধ্যে রয়েছে।
আয়তন:- দৈর্ঘ ২০২ সেন্টিমিটার। আমাদের দেশের সাধারণ মানুষের অবয়ব বা আকৃতি থেকে কোন দিক থেকে বড় নয়্।
নিম্নে কিছু ছবি থেকে তার জ্বলজেন্ত প্রমাণ আপনারা পেয়ে যাবেন আশা করি...
![]() |
গ্লাসের কফিনে মমি করা লাশ দেখছেন দর্শক |
![]() |
গ্লাস বন্দি লাশগুলো দ্যা রয়েল মমীতেে |
ক্যাপশনে দেওয়া ছবিগুলোর আয়তন কত হতে পারে তা আপনারা সহজে অনুমান করতে দ্বিধাগ্রস্থ হবেননা।
আমাদের দেশে একটা কথা প্রচলিত আছে যে, ফেরাউনের দেহ ৬০-১২০ হাত লম্বা ছিল । এই কথার সাথে ক্যাপশনের ছবিগুলোর বৈপরিত্য, ফেরাউনের লাশটি ঘিরে কৌতুহলের শেষ নেই।
সংগ্রহিত একটি ছবি থেকে বিষয়টা আরও ক্লিয়ার হওয়া যাবে... ছবিটি দেখতে এখানে
আলোচনার ভিন্নতা দেখা দিয়েছে ছবিগুলো দেখার পর থেকে।
এখন যুগযুগ ধরে চলে আসা দেহ তথ্যটিকে সঠিক বলবো নাকি ছবিতে দেখা মূলরূপকে সঠিক মানবো?
সুতরাং বাস্তবতায় না ফিরলে বিষয়টি প্রশ্নবিদ্ধ থেকে যাচ্ছে, আর বাস্তব হল এই যে, কোরআনে বলা অনুপাতে লাশের লম্বা , চওড়া , দৈর্ঘ , প্রস্থ ৫০-৬০ হাত হওয়ারই কথা । যেহেতু পূর্বেকার মানুষগুলো লম্বা এবং শক্তিশালী ছিল , কালে কালে যুগেযুগে মানুষের আকৃতি ছোট থেকে ছোট হবে এটাই স্বাভাবিক।বিংশ শতাব্দির মানব দেহ যদি ৬-৭ ফুট হয় তাহলে ৫হাজার বচর পূর্বকার মানুষের দেহের গঠন কতটুকু হবে?
এ বিষয়ে আরও শিওর হতে ভিডিওটি দেখুন ফিরাউনের ভিডিও
আশি দশকের পরে বর্তমানে মিশর জাদুঘরে সংরক্ষিত লাশটি ফ্রেমবন্দী করা হয়েছে ।
![]() |
পিরামিড |
![]() |
লাশকে মমী করছেন ডা: |
![]() |
প্রদশনীর জন্য লাশ সংরক্ষণ |
![]() |
ল্যাবরেটরিতে লাশ বাধায় |
যারা বলছে ফেরাউনের লাশ মিশরে সংরক্ষণ তাদের ধারণা হল... মিশরের ফেরাউন বংশের রাজা ফেরাউন ২য় এর মমী অলৌকিকভাবে সংরক্ষিত আছে।
ফেরাউনের মমীর বয়স প্রায় ৩০০০ বছর। ১৮৯৮ সালে লোহিত সাগরে জাবালিয়ান নামক স্থানে ফেরাউনের দেহটি প্রথম আবিষ্কার করা হয়। বর্তমানে দেহটি কায়রোর ইজিপশিয়ান জাদুঘরের রাজকীয় মমী চেম্বারে প্রদর্শিত আছে। দেহটি কোন বশ্য (বিশেষ ব্যবস্থায় মমী করা) ছাড়াই সংরক্ষিত আছে। দেহের ভিতরের কোন অঙ্গও অপসারণ করা হয়নি। মিশরের অন্যান্য মমীগুলোকে বিশেষ ব্যবস্থায় মমী করার পরেও ফেরাউনের মমীর মতো এত ভালভাবে সংরক্ষণ করা সম্ভব হয়নি। যদিও ফেরাউনের দেহটি ৩০০০ বছরেরও বেশি সময় ধরে সাগরে ছিল তবুও সাগরের মাছ দেহটির কোনও ক্ষতি করেনি। এতদিন সাগরে দেহ থাকলে খুব সহজেই তা মাছের খেয়ে ফেলার কথা কিন্তু তারা তা করেনি। ফেরাউন ছিল মিশরের বিখ্যাত ও নিষ্ঠুর রাজা। সে নিজেকে সৃষ্টিকর্তা বলে দাবি করেছিল।
যারা তার পূজা করতোনা তাদেরকে সে নানাভাবে অত্যাচার করতো।
এসকল মানুষকে নিপীড়ন ও নির্যাতনের হাত থেকে বাঁচানো এবং সঠিক পথে আনার জন্য আল্লাহ্ মুসা নবীকে পাঠিয়েছিলেন। ফেরাউন ও তার অনুসারীরা ভেবেছিলো যে মিশরের ঐতিহ্যগত ধর্ম পরিবর্তনের মাধ্যমে ক্ষমতা দখল করা মুসা নবীর উদ্দেশ্য। ঐতিহ্যগত ধর্ম নানাভাবে ফেরাউনকে সুবিধা দিয়ে আসছিলো। তাই ফেরাউন সৃষ্টিকর্তার অস্তিত্বে অস্বীকার করে।
ফলস্বরূপ আল্লাহ্ তার অনুসারীদের উপর নানা দুর্যোগ প্রদান করেন। তা সত্ত্বেও ফেরাউন নিজেকেই স্রষ্টা বলে দাবি করেছিলো। তাই আল্লাহ্ জলে ডুবিয়ে ফেরাউনের মৃত্যু ঘটিয়েছিলেন এবং ৩০০০ বছর ধরে দেহটি সংরক্ষণ করে আসছেন। এরকম ঘটনা পৃথিবীর ইতিহাসে নজিরবিহীন
পশ্চাদপদ নাস্তিকরা এই বিষয় নিয়ে ঠা্ট্টতামাশা করছে...নাস্তিকদের জঘন্য মন্তব্য
পরিশেষে এই কথা্ প্রমাণ হতে চলেছে যে, মিশরের কোন প্রতারক রাজা মানুষদেরকে বোকা বানিয়ে ঘোলা পানিতে মৎস শিকার করেছে।
والله اعلم