ব্লগটি শেয়ার করুন

মুফতী সিরাজী

কোরবানীর তাৎপর্য → মুফতী সিরাজী

বৃহস্পতিবার, ২৬ অক্টোবর, ২০১৭

মিশর জাদুঘরে অক্ষত লাশটি মূলত কার?

আমাদের দেশে বহুকাল ধরে রূপ কথার গল্পের মত আলোচিত ফেরাউনের দেহ তথ্য।



(মিশরের জাদুঘরে অক্ষত ফিরাউনের লাশটি নিয়ে চলছে নানা রকম সন্দিহান)

বিজ্ঞানের এই যুগে অবাস্তব কোন জিনিস মানুষের অগাধ বিশ্বাসকে লুণ্টন করে বেশি সময় টেকসয় হয়না।

আধুনিক চিন্তাচেতনার সামনে অনেক কিছুই দিবালোকের ন্যায় প্রকাশমান । 
দ্যা রয়েল জাদুঘর : কায়রো ,মিশর
মিশরে দ্যা রয়েল জাদুঘরে সংরক্ষিত ফেরাউনের লাশটির সাইজ কতটুকু? এই নিয়ে বিতর্ক রয়েছে অনেক । আধুনিক বিজ্ঞানীরা মিশেরর জাদুঘরে বর্তমানে সংরক্ষিত যে লাশটি রয়েছে তার ব্যাপারে যুক্তি ও বাস্তবতার চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছে।
হযরত মূসা (আ:) সময়কার ফেরাউনের লাশের ব্যাপারে দেহতথ্য কি?

👀 এবার আসোন কুরআনের আলোকে যুক্তি ও বাস্তবতার মাধ্যমে বিষয়টা পরিস্কার করে নেওয়া যাক।
۞
فَالْيَوْمَ نُنَجِّيكَ بِبَدَنِكَ لِتَكُونَ لِمَنْ خَلْفَكَ آَيَةً وَإِنَّ كَثِيرًا مِنَ النَّاسِ عَنْ 
آَيَاتِنَا لَغَافِلُونَ 
۞৯২:
অর্থা‍‍ৎ “আজ আমি তোমার দেহ চড়া ভূমিতে রক্ষা করবো যাতে তুমি তোমার পরবর্তীদের জন্য নিদর্শন হয়ে থাক। অবশ্য মানুষের মধ্যে অনেকেই আমার নিদর্শন সম্পর্কে উদাসীন।” (১০:৯২)

পবিত্র এই কোরআনের আয়াতকে পূজি করে তথা কথিত বিভ্রাতকারীরা নিজেদের সংস্কৃতিকে বিশ্বদরবারে উচ্চমাত্রায় চালিয়ে দেওয়ার জন্য ফন্দি এটে দিয়েছে।
ধারণা করা হচ্ছে ঐতিহাসিকগণ ১৮৯৮ সালে ফেরাউনের লাশ উদ্ধার করেন। যা আজ মিশরের কায়রোতে দ্যা রয়েল মমী হলে একটি কাচের সিন্দুকের মধ্যে রয়েছে। 
আয়তন:- দৈর্ঘ ২০২ সেন্টিমিটার। আমাদের দেশের সাধারণ মানুষের অবয়ব বা আকৃতি থেকে কোন দিক থেকে বড় নয়্।
নিম্নে কিছু ছবি থেকে তার জ্বলজেন্ত প্রমাণ আপনারা পেয়ে যাবেন আশা করি...

গ্লাসের কফিনে মমি করা লাশ দেখছেন দর্শক 
গ্লাস বন্দি লাশগুলো দ্যা রয়েল মমীতেে
ক্যাপশনে দেওয়া ছবিগুলোর আয়তন কত হতে পারে তা আপনারা সহজে অনুমান করতে দ্বিধাগ্রস্থ হবেননা।
আমাদের দেশে একটা কথা প্রচলিত আছে যে, ফেরাউনের দেহ ৬০-১২০ হাত লম্বা ছিল । এই কথার সাথে ক্যাপশনের ছবিগুলোর বৈপরিত্য, ফেরাউনের লাশটি ঘিরে কৌতুহলের শেষ নেই।
সংগ্রহিত একটি ছবি থেকে বিষয়টা আরও ক্লিয়ার হওয়া যাবে... ছবিটি দেখতে এখানে 

আলোচনার ভিন্নতা দেখা দিয়েছে ছবিগুলো দেখার পর থেকে।
এখন যুগযুগ ধরে চলে আসা দেহ তথ্যটিকে সঠিক বলবো নাকি ছবিতে দেখা মূলরূপকে সঠিক মানবো?
সুতরাং বাস্তবতায় না ফিরলে বিষয়টি প্রশ্নবিদ্ধ থেকে যাচ্ছে, আর বাস্তব হল এই যে, কোরআনে বলা অনুপাতে লাশের লম্বা , চওড়া , দৈর্ঘ , প্রস্থ ৫০-৬০ হাত হওয়ারই কথা । যেহেতু পূর্বেকার মানুষগুলো লম্বা এবং শক্তিশালী ছিল , কালে কালে যুগেযুগে মানুষের আকৃতি ছোট থেকে ছোট হবে এটাই স্বাভাবিক।বিংশ  শতাব্দির মানব দেহ যদি ৬-৭ ফুট হয় তাহলে ৫হাজার বচর পূর্বকার মানুষের দেহের গঠন কতটুকু হবে?
এ বিষয়ে আরও শিওর হতে ভিডিওটি দেখুন ফিরাউনের ভিডিও 
আশি দশকের পরে বর্তমানে মিশর জাদুঘরে সংরক্ষিত লাশটি ফ্রেমবন্দী করা হয়েছে ।
পিরামিড


লাশকে মমী করছেন ডা:


প্রদশনীর জন্য লাশ সংরক্ষণ

ল্যাবরেটরিতে লাশ বাধায়

যারা বলছে ফেরাউনের লাশ মিশরে সংরক্ষণ তাদের ধারণা হল... মিশরের ফেরাউন বংশের রাজা ফেরাউন ২য় এর মমী অলৌকিকভাবে সংরক্ষিত আছে। 
ফেরাউনের মমীর বয়স প্রায় ৩০০০ বছর। ১৮৯৮ সালে লোহিত সাগরে জাবালিয়ান নামক স্থানে ফেরাউনের দেহটি প্রথম আবিষ্কার করা হয়। বর্তমানে দেহটি কায়রোর ইজিপশিয়ান জাদুঘরের রাজকীয় মমী চেম্বারে প্রদর্শিত আছে। দেহটি কোন বশ্য (বিশেষ ব্যবস্থায় মমী করা) ছাড়াই সংরক্ষিত আছে। দেহের ভিতরের কোন অঙ্গও অপসারণ করা হয়নি। মিশরের অন্যান্য মমীগুলোকে বিশেষ ব্যবস্থায় মমী করার পরেও ফেরাউনের মমীর মতো এত ভালভাবে সংরক্ষণ করা সম্ভব হয়নি। যদিও ফেরাউনের দেহটি ৩০০০ বছরেরও বেশি সময় ধরে সাগরে ছিল তবুও সাগরের মাছ দেহটির কোনও ক্ষতি করেনি। এতদিন সাগরে দেহ থাকলে খুব সহজেই তা মাছের খেয়ে ফেলার কথা কিন্তু তারা তা করেনি। ফেরাউন ছিল মিশরের বিখ্যাত ও নিষ্ঠুর রাজা। সে নিজেকে সৃষ্টিকর্তা বলে দাবি করেছিল। 
যারা তার পূজা করতোনা তাদেরকে সে নানাভাবে অত্যাচার করতো। 

এসকল মানুষকে নিপীড়ন ও নির্যাতনের হাত থেকে বাঁচানো এবং সঠিক পথে আনার জন্য আল্লাহ্ মুসা নবীকে পাঠিয়েছিলেন। ফেরাউন ও তার অনুসারীরা ভেবেছিলো যে মিশরের ঐতিহ্যগত ধর্ম পরিবর্তনের মাধ্যমে ক্ষমতা দখল করা মুসা নবীর উদ্দেশ্য। ঐতিহ্যগত ধর্ম নানাভাবে ফেরাউনকে সুবিধা দিয়ে আসছিলো। তাই ফেরাউন সৃষ্টিকর্তার অস্তিত্বে অস্বীকার করে। 

ফলস্বরূপ আল্লাহ্‌ তার অনুসারীদের উপর নানা দুর্যোগ প্রদান করেন। তা সত্ত্বেও ফেরাউন নিজেকেই স্রষ্টা বলে দাবি করেছিলো। তাই আল্লাহ্‌ জলে ডুবিয়ে ফেরাউনের মৃত্যু ঘটিয়েছিলেন এবং ৩০০০ বছর ধরে দেহটি সংরক্ষণ করে আসছেন। এরকম ঘটনা পৃথিবীর ইতিহাসে নজিরবিহীন

পশ্চাদপদ নাস্তিকরা এই বিষয় নিয়ে ঠা্ট্টতামাশা করছে...নাস্তিকদের জঘন্য মন্তব্য 
পরিশেষে এই কথা্ প্রমাণ হতে চলেছে যে, মিশরের কোন প্রতারক রাজা মানুষদেরকে বোকা বানিয়ে ঘোলা পানিতে মৎস শিকার করেছে।

والله اعلم


শুক্রবার, ১৬ অক্টোবর, ২০১৫

ভারতে সাধুজনের বোধলোপ পেয়ে এখন সংঘাতের ধিকে মোড় ঘুরাচ্ছে | মুফতী সিরাজী

দ্ব্যর্থহীকন্ঠে  আমাদের কিছুু কথা




স্বামীজী!  দৃষ্টিভঙ্গিটা বদলিয়ে ফেলুন! মুসলিম আমি চির উন্নত মমশির।

ভারতবর্ষে আপনাদের যেমন মোড়লগিরীর দাপোটে আজ নড়বড়ে পরিস্থিতি, তেমনি আমাদেরও আছে সর্ববৃহৎ ঈমানী জ্বালাময়ী চেতনা।

কী বিশ্বাস হচ্ছেনা? তাহলে  ইন্ডিয়ান প্রাচীন দলিল পত্র/ স্থাপনা নিদর্শনগুলো খাতিয়ে দেখুন।
 পেয়ে যাবেন সহস্রাধিক প্রমান, যেখানে একথা পরিস্কার যে. সাড়ে আটশত বৎসর বিচক্ষণতার সাথে রাজত্বকাল অতিবাহিত করেছি আমরা।
আমাদের হাতেই ভারতের সকল জাতি  "কর" দিয়ে ব্যবসাবাণিজ্য, জমিজায়গা, লেনদেনজনিত সহ সকল দৈনিন্দিন কার্যসম্পাদন করতো।

শুধু কি তাই? ভারতবর্ষে আইন-নীতি, যত ধরণের শাসনকাজ ছিল, সব কিছুই আমাদের নিপুণ হাতে পরিচালিত হতো।

যে কোন জুলুমবাজ মোড়লদের পাকড়াও করে উপযুক্ত শাস্তির ব্যবস্থা করে সন্তুষ্টচিত্ত বিচারের ভূমিকায় অটুট থেকেছি।

ইংল্যান্ডের এক রাষ্ট্রবিজ্ঞান কিছুদিন পূর্বে সোশ্যাল মিডিয়ায় একথার সাক্ষ দিয়েছেন যে, "মুসলিম শাসকগণ"  যদি বলদর্পি  হতো, তবে একটি হিন্দু মালোয়ানও থাকতো না ভারতব্যাপী।

শতশত দলিলপত্র, স্থাপনায় আপনারা অগ্নিসংযোগ করে ঘুরিয়ে দিতে পারেন বটে আমাদের ঐতিহাসীক নিদর্শনগুলো কিছুতেই মুছে দেওয়া যাবেনা।
একটি ধ্বংস করে অন্য একটির দিক চোখ ঘুরিয়ে থাকালেই দেখবেন সেটাও মুসলিদের কৃতিসাধ্য।

প্রভুর মহিমায় কালের বিবর্তনে আজ আমরা বঞ্চিত, নিপীড়িত।

আমাদের অস্রবল নেই বলে আমাদেরকে এতটা দুর্বল ভেবে ভারত ছাড়ার হুমকি দিবেননা।

জনবল কম হলে আর কি হবে, আমরা তো ঈমানের বলে বলিয়ান।
মুহাম্মদ বিন কাসীমের সংকল্প নিয়ে যেদিন মাঠে রণ দামামা বাজবে! সেদিন দিল্লির মসনদ ভেঙ্গেচুরে চুরমার হয়ে ভারতে আকাশে "গজওয়ায়ে হিন্দের" পতাকা উড়বে।

এটা মাত্র সময়ের ব্যাপার! 

আপনারা যে পশুটিকে রাষ্ট্রিয়  "মা" ঘোষিত করলেন :-D এর চামড়া দিয়ে জুতু পড়তে দ্বিধা করেননা কেন?


রবিবার, ২০ সেপ্টেম্বর, ২০১৫

কোরবানীর তাৎপর্য → মুফতী সিরাজী


পৃথিবীর সূচনালগ্ন থেকে কুরবানীর প্রচলন, যার বাস্তব ধারা আজও অব্যাহত।



হযরত আদম (আঃ)-পুত্রদ্বয়  "হাবিল" "কাবিল " থেকে তার সুত্রপাত


মানবসম্প্রদায়ের ঝগড়ার মূল উৎপত্তিকে সমাধানের জন্য আল্লাহর নিকট আবেদনের ফলে এই উৎস্বর্গের (কুরবানী)  পথ অবলম্বন করার নির্দেশ  প্রতিপালকের পক্ষ্য থেকে দেওয়া হয়।

তাঁদের দুজনের মধ্যে হাবিলের কুরবানী কবুল হল, অপর কাবিলের কুরবানী কবুল হয়নি।কাবিলের বদমেজাজি মনোভাব থাকার দরুন আল্লাহ প্রদত্ত সিদ্ধান্তের উপর বিচলিত হয়ে পরে। 
পরবর্তীতে নিজের সহোদর ভাইকে অন্যায়ভাবে পাথর নিক্ষেপ করে হত্যা করে।

সূরায়ে  
মায়িদার ২৭-৩১ নং আয়াতে  দ্রষ্টব্য :

মূলত আল্লাহর নির্দেশ মেনে নেওয়ার মধ্যে ছিল কাবিলের সফলতা,কিন্তু সে তাতে নারাজি দেওয়ার কারণে কিয়ামত পর্যন্ত হত্যা /ঝগড়ার একাংশ তাকে গ্রহণ করতে হবে। 

বিভিন্ন জাতির কুরবানী প্রসঙ্গ :

 ঈদুল ইয়োম কিপ্পুর (Yom Kippur)- এই দিনে ইহুদিরা রোজা রাখে এবং মহা-ঈমাম তার নিজের এবং সমগ্র ইহুদি জাতির পাপ মোচনের জন্যে কোরবানী করা পশুর রক্ত নিয়ে মহাপবিত্র স্থানে প্রবেশ করেন এবং সেখানে পবিত্র সাক্ষ্য সিন্দুকের (ব্যবস্থার বাক্সের) উপর হিস্যোপ গাছের ডালের সাহায্যে এই রক্ত ছিঁটান।

এছাড়া প্রাচীন মূর্তিপূজারী ধর্মাবলম্বীদের কুরবানী রীতি জারি ছিল, এটাকে তারা পুণ্যময় কাজ মনে করত। 
পরবর্তীতে ব্রাক্ষণরা প্রাণী হত্যার দোহায় দিয়ে তাকে বিলোপ করে দেয়।

কুরআন ও হাদীসের আলোকে কুরবানীর গুরুত্ব:


কুরবানীর পরিচয়ঃ 

কুরবানী আরবী শব্দ। এর অর্থ হচ্ছে অতিশয় নিকটবর্তী হওয়া। ইসলামী শরীয়তের পরিভাষায় কোরবানী বলা হয় ঐ নির্দিষ্ট জন্তুকে যা একমাত্র আল্লাহপাকের নৈকট্য ও সন্তুষ্টি লাভের উদ্দেশে নির্দিষ্ট সময়ে একমাত্র আল্লাহর নামে জবেহ করা হয়।

ঐতিহাসিক পটভূমিঃ 

আল্লাহতায়ালা মুসলিম জাতির পিতা হযরত ইব্রাহিম (আঃ) কে অনেকবার পরীক্ষা করেছেন। সকল পরীক্ষায় তিনি অত্যন্ত সফলতার সাথে উত্তীর্ণ হয়েছেন। একরাতে তিনি স্বপ্নে দেখলেন, আল্লাহপাক তাকে ইঙ্গিত করেছেন প্রাণধিক পুত্র হযরত ইসমাঈল (আঃ) কে কুরবানী করতে। বৃদ্ধ বয়সের একমাত্র সন্তান হযরত ইসমাঈল (আঃ)-এর অপেক্ষা অধিকতর প্রিয় আর কি হতে পারে। তিনি আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য সিদ্ধান্তে পৌঁছলেন যে, হযরত ইসমাঈল (আঃ) কে কুরবানী করবেন। তখন তিনি হযরত ইসমাঈল (আঃ) বললেন, যা পবিত্র কুরআনে এভাবে বর্ণিত হয়েছেঃ 

فَلَمَّا بَلَغَ مَعَهُ السَّعْيَ قَالَ يَا بُنَيَّ إِنِّي أَرَىٰ فِي الْمَنَامِ أَنِّي أَذْبَحُكَ فَانظُرْ مَاذَا تَرَىٰ ۚ قَالَ يَا أَبَتِ افْعَلْ مَا  تُؤْمَرُ ۖ سَتَجِدُنِي إِن شَاءَ اللَّهُ مِنَ الصَّابِرِينَ 
“হে বৎস! আমি স্বপ্নে দেখেছি যে, তোমাকে আমি জবাই করছি। এখন তোমার অভিমত কি? 
” সে (হযরত ইসমাঈল (আঃ)) বলল, “হে পিতা! আপনি যা আদিষ্ট হয়েছেন তাই করুন। আল্লাহ চাহেতো আপনি আমাকে ধৈর্যশীলদের অন্তর্ভুক্ত পাবেন।” (সূরা সফফাত আয়াত-১০২)।

 ছেলের সাহসিকতাপূর্ণ জবাব পেয়ে হযরত ইব্রাহীম (আঃ) অত্যন্ত খুশি হলেন। মহান আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের উদ্দেশ্যে ছেলের গলায় ছুরি চালান। তখন হযরত জিব্রাইল (আঃ) আল্লাহর নির্দেশে বেহেশত হতে একটা দুম্বা নিয়ে রওয়ানা হলেন। তার মনে সংশয় ছিল পৃথিবীতে পদার্পণের পূর্বেই হযরত ইব্রাহীম (আঃ) যবেহ কাজ সম্পূর্ণ করে ফেলবেন। তাই জিবরাইল (আঃ) আকাশ হতে উচ্চৈস্বরে ধ্বনি দিতে থাকেন “আল্লাহু আকবার”। 

আওয়াজ শুনে হযরত ইব্রাহীম (আঃ) স্বতঃস্ফূর্তভাবে বলে উঠলেন, “লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু আল্লাহু আকবার”। পিতার মুখে তাওহীদের বাণী শুনতে পেয়ে হযরত ইসমাঈল (আঃ) বলে উঠলেন আল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার ওয়ালিল্লাহিলহামদ”। আল্লাহর প্রিয় দুই নবী এবং হযরত জিবরাইল (আঃ)-এর কালামগুলো আল্লাহর দরবারে এতই পছন্দনীয় হলো যে, কিয়ামত পর্যন্ত এই কথাগুলো ৯ই জিলহজ্ব ফজর থেকে আসর পর্যন্ত বিশেষ করে ঈদুল আযহার দিনে বিশ্ব মুসলিমের কণ্ঠে উচ্চারিত হতে থাকবে।

আল্লাহপাকের অসীম কুদরতে হযরত ইসমাঈল (আঃ)-এর পরিবর্তে কোরবানী হয়ে গেল একটি বেহেস্তী দুম্বা। কঠিন পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হলেন হযরত ইব্রাহীম (আঃ)। এ সম্পর্কে মহান আল্লাহ পবিত্র কালামে ঘোষণা করেনঃ “তখন আমি তাকে ডেকে বললাম, হে ইব্রাহীম! তুমি তো স্বপ্নকে সত্যে পরিণত করেছ। আমি এভাবেই সৎকর্মশীলদের প্রতিদান দিয়ে থাকি। নিশ্চয় এটা একটা সুস্পষ্ট পরীক্ষা। আমি তার (ইসমাঈল (আঃ)-এর পরিবর্তে দিলাম জবেহ করার জন্য এক মহান জন্তু।” (সূরা সাফফাত আয়াত-১০৪-১০৭)। 

বর্ণিত আছে যে, হযরত ইব্রাহীম (আঃ) উপরোক্ত গায়েবী আওয়াজ শুনে হযরত জিবরাইল (আঃ)কে একটি বেহেস্তী দুম্বাসহ দেখতে পান। এ জান্নাতী দুম্বা হযরত ইব্রাহীম (আঃ) কে দেয়া হলে তিনি আল্লাহর নির্দেশে পুত্রের পরিবর্তে সেটি কোরবানী করলেন। 
আর তখন থেকেই শুরু হলো কুরবানীর মহান বিস্ময়কর ইতিহাস। যা অন্ততকাল ধরে সুন্নতে ইব্রাহীম হিসেবে বিশ্বের সকল মুসলমানের কাছে আজও স্মরণীয় হয়ে আছে এবং কিয়ামত পর্যন্ত থাকবে।

কোরবানীর তাৎপর্য ও ফজিলত:

কুরবানীর তাৎপর্য ও ফজিলত সম্পর্কে বহু হাদীস পাওয়া যায়। হযরত যায়েদ ইবনে আরকাম (রাঃ) বর্ণিত। তিনি বলেন, একদা কতিপয় সাহাবী প্রিয় নবী (সাঃ) কে জিজ্ঞাসা করলেন, হে আল্লাহর রাসূল!, কুরবানী কি? প্রিয় নবী (সাঃ) বললেন, তোমাদের (জাতির) পিতা হযরত ইব্রাহীম (আঃ)-এর সুন্নত। পুনরায় প্রশ্ন করা হলো, এতে আমাদের জন্য কি আছে? রাসূলে পাক (সাঃ) বললেন, কুরবানী গরু ও বকরীর প্রতিটি পশমে নেকী রয়েছে। 

তখন সাহাবায়ে কেরাম আবার জিজ্ঞেস করলেন, তাহলে ভেড়া ও দুম্বার ব্যাপারে আপনার অভিমত কি? তিনি উত্তরে বললেন, ভেড়া ও দুম্বার পশমেও ছওয়াব আছে। (আহমাদ, ইবনে মাযাহ, মিশকাত-১২৯)।

মাসআলায়ে কোরবানী :


কুরবানীর পশু : 

উঠ, গরু, বকরী, মহিষ, ছাগল, ভেরা, দুম্বা ছাড়া কুরবানী শুদ্ধ নয়।এ গুলোকে কোরআনের ভাষায় বলা হয় “বাহীমাতুল আনআম” ।

শরিয়তের দৃস্টিতে কুরবানীর পশুর বয়সের দিকটা খেয়াল রাখা জরুরী । উঠ পাঁচ বছরের, গরু বা মহিষ দু বছরের এবং , ছাগল, ভেরা, দুম্বা এক বছর বা তারো বেশি ।

আনাস রাদিআল্লাহু আনহুর হাদীসে রয়েছে, যা বুখারী ও মুসলিম বর্ণনা করেছেন। তারা বলেন :

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তরতাজা ও শিং ওয়ালা দুটি মেষ নিজ হাতে যবেহ করেছেন এবং তিনি তাতে বিসমিল্লাহ ও তাকবীর বলেছেন।
হযরত আলী (রাঃ) থেকে বর্ণিত আছে যে, প্রিয় নবী (সাঃ) আমাদেরকে নির্দেশ করেছেন যে, আমরা কোরবানীর পশুর চোখ ও কান ভালভাবে পরীক্ষা করে নেই এবং এমন পশু কোরবানী না করি যার কানে ছিদ্র আছে (তিরমিযী শরীফ)

কুরবানী শুদ্ধ হওয়ার জন্য ত্রুটি মুক্ত পশু হওয়া জরুরী :

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহ ওয়াসাল্লাম বলেছেন : কুরবানীর পশুতে চারটি দোষ সহনীয় নয় : স্পষ্ট কানা, স্পষ্ট অসুস্থ্য, হাড্ডিসার ও ল্যাংড়া পশু। (তিরমিযী : কিতাবুল হজ : ৩৪)


যবেহ করার সময় :


ঈদের সালাতের পর কুরবানীর সময় শুরু হয়। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন :
যে সালাতের পূর্বে যবেহ করল, সে নিজের জন্য যবেহ করল। আর যে খুতবা ও ঈদের সালাতের পর কুরবানী করল, সে তার কুরবানী ও সুন্নত পূর্ণ করল। (বুখারী ও মুসলিম)

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন :
যে ব্যক্তি ঈদের আগে যবেহ করল, তার উচিত তার জায়গায় আরেকটি কুরবানী করা। আর যে এখনো কুরবানী করেনি, তার উচিত এখন কুরবানী করা। (বুখারী ও মুসলিম)

তবে যে সমস্ত গ্রাম শহর বিচ্ছিন্ন, এগুলোতে নামাজের পূর্বে কোরবাণী করার বিধান রয়েছে (ফতোয়ায়ে শামী)--কিতাবুজ জাবায়েহ। 

যে সুন্দর করে যবেহ করার ক্ষমতা রাখে তার উচিত নিজ হাতে কুরবানী করা। কুরবানীর সময় বলবে :
কুরবানীকারী নিজের নাম বলবে অথবা যার পক্ষ থেকে করবানী করা হচ্ছে তার নাম বলবে । যেমন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন :
বিসমিল্লাহি আল্লাহু আকবার; হে আল্লাহ, এটা আমার পক্ষ থেকে এবং আমার উম্মতের মধ্যে যারা কুরবানী করেনি, তাদের পক্ষ থেকে। (আবূদাউদ ও তিরমিযী)

কুরবানীর গোস্ত ভণ্টন করা :কুরবানী পেশকারী ব্যক্তির জন্য সুন্নত হচ্ছে কুরবানীর গোস্ত নিজে খাওয়া, আত্মীয় ও প্র্রতিবেশীদের হাদিয়া দেয়া এবং গরীবদের সদকা করা। 

আল্লাহ তাআলা বলেন :
অতঃপর তোমরা তা থেকে খাও এবং দুস্থ-দরিদ্রকে থেকে দাও। (হজ : ২৮)

তিনি আরো বলেন : তখন তা থেকে খাও। যে অভাবী, মানুষের কাছে হাত পাতে না এবং যে অভাবী চেয়ে বেড়ায়-তাদেরকে খেতে দাও। (হজ : ৩৬)

উলামায়ে কেরাম বলেছেন, কুরবানীর গোস্ত তিনভাগে ভাগ করে 

এক তৃতীয়াংশ নিজের জন্য রাখা।
এক তৃতীয়াংশ দরিদ্রদের দান করা ।এক তৃতীয়াংশ উপহার হিসেবে বন্ধু-বান্ধব,আত্মীয়-স্বজন ও প্রতিবেশীদের দান করা মোস্তাহাব ।

পারিশ্রমিক হিসেবে এখান থেকে কসাই বা মজদুরদের কোন অংশ প্রদান করা যাবে না।

কুরবানীর গোস্ত ভক্ষণ করাঃ

 ঈদুল আজহার দিন রাসূলূল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম খানা খেতেন না, যতক্ষণ না তিনি ঈদগাহ থেকে ফিরে আসতেন, অতঃপর তিনি কুরবানী গোস্ত থেকে ভক্ষণ করতেন।

কোরানীর গোশত যতদিন ইচ্ছে ততদিন সংরক্ষণ করে খাওয়া যাবে ।

কোরানীর গোশত তিন দিনের বেশি সংরক্ষণ করা যাবে না; বলে যে হাদিস রয়েছে তাঁর হুকুম রহিত হয়ে গেছে ।তাই জতদিন ইচ্ছা ততদিন সংরক্ষণ করে রাখা যায় ।


কুরবানী পেশকারী যা থেকে বিরত থাকবে : 

 উম্মে সালমার হাদীসে রয়েছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন
যখন জিলহজ মাসের দশ দিন প্রবেশ করে এবং তোমাদের কেউ কুরবানী করার ইচ্ছা করে, সে তখন থেকে চুল ও নখ কর্তন থেকে বিরত থাকবে। ইতিপূর্বে যা কর্তন করেছে, সে জন্য তার কোন গুনা হবে না।
কুরবানী দাতার পরিবারের লোক জনের নখ, চুল ইত্যাদি কাঁটাতে কোন সমস্যা নেই।


জ্ঞাতব্য:

 আর যদি ভুলে, অথবা না জানার কারণে অথবা অনিচ্ছাসত্বে কোন চুল পড়ে যায়, তার কোন গুনা হবে না। আর যদি সে কোন কারণে তা করতে বাধ্য হয়, তাও তার জন্য জায়েয, এ জন্য তার কোন কিছু প্রদান করতে হবে না। যেমন নখ ভেঙ্গে গেল, ভাঙ্গা নখ তাকে কষ্ট দিচ্ছে, সে তা কর্তন করতে পারবে, তদ্রূপ কারো চুল বেশী লম্বা হয়ে চোখের উপর চলে আসছে, সেও চুল কাঁটতে পারবে অথবা কোন চিকিৎসার জন্যও চুল ফেলতে পারবে।

সোশ্যল মিডিয়ায় আমাকে








বুধবার, ২৯ জুলাই, ২০১৫

আইন ও আদালতে ধর্ষণ ঠেকাতে ব্যর্থ কেন?

নীরবে ধর্ষিত
হচ্ছে বাংলাদেশের
হাজারো তরুণী
.
.
প্রেমের ফাঁদে ফেলে যদি একবার
বিছানায় নিয়ে যাওয়া যায়।
সেইবারই মোবাইলে ছবি তুলছে।
আর যদি প্রেমিকা ছবি তুলতে
না দেয় তাহলে প্রেমিক বলে জান
তোমাকে যখন মনে পড়বে
আমি তখন দেখব
এবং পরে ডিলেট করে দেব।
আমি তো এগুলো কাউকে
দেখাব না কারণ তুমি আমার জান।
কথা এইটুকুই শুনে প্রেমিকা
ভাবে না জানি ও আমাকে
কত ভালবাসে।
ছবি তুললে কি আর হবে ও
তো আমাকেই বিয়ে করবে।
তারপর অনেক কিছু ভিডিও
অথবা মোবাইল ক্যামরায় দৃশ্য
ধারণ। আসল খেলা শুরু এইবার
প্রেমিক আবারও অনৈতিক
প্রস্তাব দেয়। প্রেমিকা রাজি না।
প্রেমিকের সরাসরি হুমকি রাজি
না হলে সব ফাঁস।
কি আর করা বাধ্য
হয়ে শরীর বিসর্জন।
আপনারা কল্পনা করতে
পারবেন না কত মেয়ে এইভাবে
ধর্ষিত হচ্ছে। অনেক কুলাঙ্গার
আবার মেয়েদের পরিবার
থেকে বিপুল পরিমাণ
টাকা হাঁতিয়ে নিচ্ছে।
শুধু সন্মানের জন্য
নীরবে এইসব সহ্য করছে।
আর যেইসব মেয়েরা একবার
শরীর বিসর্জন দেওয়ার
পরও টাকা কিংবা শরীর
বিসর্জন দিতে অস্বীকৃতি জানায়
তাদের অশ্লীল ছবি ও
ভিডিও চিত্র মানুষের
হাতে চলে যাচ্ছে, ,,,,,,,,
লজ্জাকর পরিস্থিতি তে অনেক
বোন নীরবে আত্মহননের
পথ বেছে নিচ্ছে।. . .(বিমূর্ত)
.
এই লেখাটাতে সামান্য
অশ্লীলতা থাকতে পারে সেই
জন্য আমি দুঃখিত।
আপনারা কোন প্রকার
দ্বিধা কিংবা লজ্জা না করে
লেখাটি শেয়ার করবেন
যাতে আপনার বা
আমার বোন এই ধরনের
পরিস্থিতি থেকে রক্ষা পায়।
কারন আমরা মুখে বলে
তাদেরকে এই ধরনের কথা
বুঝাতে লজ্জা বোধ করব।।


রবিবার, ৫ এপ্রিল, ২০১৫

সিদুর প্রথা মুসলিম নারীদের কলঙ্ক পরিচ্ছেদ

সিদুর পড়া ফ্যাশন নয়, ভিন্ন ধর্মালম্বীদের রীতি।

আজ ফ্যাশন প্রিয় দুনিয়ায় মডেল 
তারকাদের পদঙ্ক অনুস্বরণ করা হচ্ছে।
পিছন ফিরে থাকিয়ে দেখেনা সে তাঁর স্বজাতীয় সংস্কৃতিকে কিভাবে অবহেলিত করেছে।

বিজাতীয় কাল্চারে গ্রাস করে ফেলেছে আমাদের বাৎসরিক সবকটি দিবসকেই।

Ibn Umar reported: The Messenger of Allah, peace and blessings be upon him, said, “Whoever imitates a people is one of them.”

Source: Sunan Abu Dawud 4031

Grade: Hasan (fair) according to Ibn Hajar

عَنْ ابْنِ عُمَرَ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مَنْ تَشَبَّهَ بِقَوْمٍ فَهُوَ مِنْهُمْ

4031 سنن أبي داود كِتَاب اللِّبَاسِ من تشبه بقوم فهو منهم

المحدث ابن حجر العسقلاني خلاصة حكم المحدث إسناده حسن

ইবনে ওমর (রাদিঃ) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সাঃ) বলেন যে ব্যক্তি যেই সম্প্রদায়ের অনুরূপ ধারণ করবে, সে ঐ দলেরই অন্তরভুক্ত।

সুনানে আবু দাউদ হাদীস নং ৪০৩১

নমরুদের নির্দেশনায় যে সমস্ত নাবালিকাদের অবৈধ সঙ্গম করানো হয়েছিল তাদের পরবর্তী সনাক্তকরণের প্রতিক হিসাবে সিদুর এটে দেওয়া হয়েছিল কিশুরীদের কপালে।
সেই থেকে সিদুরের প্রথা চালু 

বর্বরোচিত এক কাল্চার আমাদের ধর্মীয় পথে অন্তরায় 

(মুফতী সিরাজী) 



সোমবার, ২৩ মার্চ, ২০১৫

একই কালিমা পড়ুয়া মুসলমান পরস্পরে কাফের বলা

প্রত্যেহ ঈমান দাবীদার
অন্য মুসলিমকে কাফের সম্বোধন করা প্রসঙ্গে

বর্তমান ওয়াজ মাহফিল, ওরস ও ইসলামি সম্মেলনে নিজ দলকে "হক তথা আল্লাহর বান্দা ও নবীজির আশেক দাবীদার কতিথ অযোগ্য আলেম, নিজের ঈমানের প্রতি বেখিয়াল থাকা সত্তেও শীর্ষস্থানীয় বুযুর্গানে হক্কানীদের কাফের ফতোয়া দানে একটুও দ্বিধা করেনা।

সকল নবী-রাসুলগণের কাজ ছিল সকল বেধর্মীদের ঈমানদার বানানো, আর তথাকথিত ভন্ড আলেমের কাজ সকল কামেল ঈমানদারদের কাফের বানিয়ে দেওয়া।
মাহফিলে বসেই কাফেরের লম্বা এক লিস্ট তৈরি করে।
যেমন-(ফুলতুলি কাফের, ফরফুরা শরীফ কাফের,জৈনপুরী কাফের, আশরাফ আলী থানবী কাফের, কাসেম নানুথবী কাফের)

অথচ অনেক মনষীগণ নিজের জীবনে আছরের সুন্নাতে কাজা করেনি আর কাফের ফতোয়াবাজ মৌলভী ওয়াজ শেষে  গন্তব্যপথ চলতি গাড়িতে ফজর নামাজ ঘুমিয়েই কাঠায় ।
এই হল আমাদের দেশের
কাফের ফতোয়াবাজ কথিত মৌলভী 

কোনো মানুষকে কাফের বলা !

কোনো মানুষ যদি আমাদের
মতবাদে একমত না হয়, তাহলে
শুধুমাত্র লোকমুখে শোনা কথার
উপর ভিত্তি করে তাকে
কাফের বলতে ভয় করিনা,
 চাই
তিনি যতো বড় মুমিন হোন না
কেন।
 তাঁর ঈমানের বাস্তবতা
যাচাই করারও প্রয়োজন মনে করি
না এবং তাঁর ঐ জীবন
ইতিহাসের প্রতিও লক্ষ্য করি না,

যা তিনি দ্বীনের প্রচার-প্রসার
এবং সুন্নাত জিন্দা করার জন্য
ওয়াক্ফ রয়েছেন।
এমনকি তাঁর
সুন্নতের উপর আমল করার ইচ্ছার
মুল্যয়ন করা হয় না এবং আল্লাহ ও
নবীর ভালবাসার আগুন যা তার
বক্ষকে ভুনা করে ছেড়েছে
এবং কলিজাকে কাবাব
বানিয়ে দিয়েছে, এর কোনটার
প্রতিই লক্ষ করা হয় না।
অথচ
নির্দ্বিধায় তাঁদেরকে কাফের
বলে ফতোয়া দেয়া হয়।

ধরণের অজ্ঞতার পরিণামের
কথা একটু চিন্তা করে নেয়া
দরকার।
হাদীস আছে,

() ﻋﻦ ﺍﺑﻦ ﻋﻤﺮ ﺭﺿﻰ ﻗﺎﻝ ﻗﺎﻝ ﺭﺳﻮﻝ ﺍﻟﻠﻪ
ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ ﺍﻳﻤﺎ ﺭﺟﻞ ﻗﺎﻝ ﻻﺧﻴﻪ
ﻛﺎﻓﺮﻓﻘﺪ ﺑﺎﺀ ﺑﻬﺎ ﺍﺣﺪ ﻫﻤﺎ ‏( ﻣﺸﻜﻮﺓ ﺷﺮﻳﻒ
ﺻـ )
অর্থ ঃ হযরত আবদুল্লাহ ইবনে ওমর
(রা.) হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম ইরশাদ করেন,
 যদি কেউ
কোন মুসলমানকে কাফের বলে,
কাফের বলে ফতোয়া দেয়
তাহলে দুইজনের একজন অবশ্যই
কাফের হয়ে যাবে।

হাদীসের অর্থ হল, যাকে
কাফের বলা হল সে যদি
বাস্তবে কাফের হয় তাহলে
তো সে কাফের আছেই ও
থাকবে।
আর যদি সে কাফের না
হয় তাহলে কাফের শব্দ
উচ্চরণকারী কাফের হয়ে যায়।

কারণ সে ঈমানকে কুফর ও
কুফরকে ঈমান বলে সাব্যস্ত
করেছে। (নাউযুবিল্লাহ)

দ্বীন ও
ইসলামের স্তম্ভের উপর যারা
লাগামহীন ভাবে কুফরের
মেশিনগাণ চালায় তারা যেন
উক্ত হাদীসের প্রতি একটু লক্ষ্য
করেন।

কারণ এতে যাকে
কাফের বলা হল, তার ঈমানী
দুর্গের কোন ক্ষতি না হয়ে
বলনেওয়ালার ঈমানী কুঁড়েঘরটি
মাটির সাথে মিশে যাওয়ার
সম্ভাবনা রয়েছে প্রবল।
তাই
কবি কলেন! এই ঘর যা জ্বলছে,
দেখ তোমার ঘর কিনা?

অন্য হাদীসে আছে,

() ﻋﻦ ﺍﺑﻰ ﺫﺭ ﺭﺿﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﺗﻌﺎﻟﻰ ﻋﻨﻪ ﻗﺎﻝ ﻗﺎﻝ
ﺭﺳﻮﻝ ﺍﻟﻠﻪ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ ﻻﻳﺮﻣﻰ
ﺭﺟﻞ ﺭﺟﻼً ﺑﺎﻟﻔﺴﻮﻕ ﻭﻻﻳﺮﻣﻴﻪ ﺑﺎﻟﻜﻔﺮﺍﻻ ﺍﺭﺗﺪﺕ
ﻋﻠﻴﻪ ﺍﻥ ﻟﻢ ﻳﻜﻦ ﺻﺎﺣﺒﻪ ﻛﺬﻟﻚ . ﺭﻭﺍﻩ
ﺍﻟﺒﺨﺎﺭﻯ- ‏( ﻣﺸﻜﻮﺓ ﺷﺮﻳﻒ ﺻـ )

অর্থ ঃ হযরত আবু যর (রা.) হতে
বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন,
কোন মানুষ অন্যের উপর যদি
ফিস্ক অথবা কুফরের অপবাদ দেয়,
আর বাস্তবে সে যদি এমন না হয়
তাহলে অপবাদদাতা ফাসেক বা
কাফের হয়ে যায়।

অর্থাৎ যাকে ফাসেক বা
কাফের বলা হল, বাস্তবে সে
যদি ফাসেক বা কাফের না হন।

তাহলে স্বয়ং বলনেওয়ালা
ফাসেক বা কাফের হয়ে যাবে।

(হে আল্লাহ! আপনি
আমাদেরকে এ ধরনের কথা
থেকে রক্ষা করুন)

-----মুফতী সিরাজী -----


বুধবার, ২১ জানুয়ারী, ২০১৫

ইসলাম বিদ্ধেশীরা আবার মুসলমাদের উস্কে দিচ্ছে

নিন্দাজনক অপকর্মের প্রতিফল কী? 



শুকুন সর্বদা চুষে,চেটে খায়! অন্যের
ঘায়ে কাঁদা মেখে।

কবি বলেন- রাসুলের
অপমানে যদি কাঁদে না তুর মন # মুসলিম
নয় মুনাফিক তুই রাসুলের দুষমন !!
(কাজী নজরুল ইসলাম)

আবার কেহ ভাববেন না এটা কোন
জঙ্গির হুংকার...
মুসলিম ভ্রাতিত্বের জাগরণী এক
কবিতার অংশ এটি।

আমি জানি আমার কথায় অনেকের
হৃদয়ে আঘাত লেগে যেতে পারে,
তার পরও আমাকে কলম ধরতে হচ্ছে ঐ সকল
জানোয়ারদদের বিরুদ্ধে।
আজ মনে শহস্র বেথা-বেধনার মধ্য
দিয়ে জানাচ্ছি তুদেরকে শতঘৃন্য
নিন্দাবাদ,
যারা আমার রাসুলের ব্যাঙ্গচিত্র
করে মুসলিম ভাইদের মনে ক্ষোভ
জন্মাচ্ছিস।

এমন একটি ব্যাঙ্গাত্বক কুরুচিপূর্ণ কোন
ধর্মীয় অনুভুতিতে আঘাত জনিত
ম্যাগাজিন যদি কোন মুসলিম দেশ
থেকে প্রকাশীত হত,
তবে ঐ ধর্মের
স্যাটেলাইটধারী মিসাইল
হামলাকারীরা স্ব'উদ্যেগে রনতরি থেকে হামলা শুরু
করতো ঐ মুসলিম দেশটির উপর।
আর ঐ আগ্রাসনের নাম দেওয়া হত
সন্ত্রাস মোকাবিলা যৌথমহড়া।

কিন্তু মুসলমান হওয়াতে আমরা ঐরকম কিছু
আংশিক প্রতিঘাত করলেই (জঙ্গি,
সন্ত্রাস) তালেবান হয়ে যায়?
গত কিছু দিন পূর্বে ফ্রান্সে ইসলাম
বিদ্ধেশী ম্যাগাজিন অফিসে মুসলিম
তরুণদের হামলাই সকল কাফের
পরাশক্তি ( ﺍﻟﮑﻔﺮ ﻣﻠﺖ ﻭﺍﺣﺪﺍ )
ঐক্যবদ্ধ হয়েছে,
সেখানে এই ম্যাগাজিন,
মুভি নির্মাতা মুসলিম তরুণ
প্রজন্মকে শান্তি রক্ষায় আমন্ত্রন
জানিছে, অপর দিকে (ব্যাঙ্গাত্বক)
ম্যাগাজিনটি লক্ষাধিক
কপি চাপানোর
ইতিমধ্যে ঘোষণা দিয়েছে তারা।


Twitter Delicious Facebook Digg Favorites More